পদার্থঃ হে নারী! (অধঃ পশ্যস্ব) নিচে দেখ (মা উপরি) উপরে দেখ না। (পাদকৌ সন্তরাং হর) দুই পাকে ঠিক প্রকারে একত্র করে রাখ। (তে কশপ্লকৌ) তোমার গোপানঙ্গ-দুই স্তন, পীঠ আর পেট, দুই নিতম্ব, দুই জঙ্ঘা, দুই কনুই আর দুই গোড়ালি (মা দৃশন্) প্রদর্শন করবে না। এই সব-কিছু কি জন্যে? (হি) কেননা (স্ত্রী) স্ত্রী (ব্রহ্মা) ব্রহ্মা, নির্মাণকর্ত্রী (বভূবিথ) হয়ে থাকে।। ১৯।।
৪. নারীর জন্য এমন বন্ধন কেন? এমন কঠোর সাধনা কি জন্য? এইজন্য যে নারী ব্রহ্মা, সে জীবন-নির্মাত্রী আর সৃজনকর্ত্রী। যদি নারীই পথভ্রষ্ট হয়ে যায় তখন সৃষ্টিও পথভ্রষ্ট হয়ে যায়। মাতা আর বনেরা ! নিজের অঙ্গের প্রদর্শন করবে না।
যেরূপ উত্তম ফলের জন্য উত্তম বীজের চয়ন করতে হয় , কেননা যদি বীজই নিকৃষ্ট, হীনবীর্য, দোষ যুক্ত হয় তবে উৎপন্ন উৎকৃষ্ট হয় না। ঐরূপই স্ত্রী যদি সংযমী, লজ্জাগুণশালী, গম্ভীর, শালীন, পুরুষার্থী, ত্যাগী, তপস্বী হয়, চরিত্রবান হয় তখন সন্তানও ঐরূপই হয়।
আজ উচ্ছৃঙ্খল, স্বচ্ছন্দী, লম্পট, অলস, প্রমাদী, কামুক, ক্রোধী সন্তানের মূখ্য কারণ মা-ই হয়। মায়ের পদবী কেবল বাচ্চার উৎপন্ন করাতে অথবা তাহাদিগের রুটি খাওয়াতে অথবা লাল, নীল, হলুদ কাপর পরিধানের জন্য হয় না। মা, মা তখনই হয় যখন সে বাচ্চাকে চরিত্রবান, রাষ্ট্র ভক্ত, ঈশ্বর বিশ্বাসী, সমাজ সেবা বানিয়ে। এই সবই হওয়া উচিত যখন সে স্বয়ং এই গুণের দ্বারা যুক্ত থাকে।
আজ সমাজে যে স্ত্রীদের সাথে উত্তক্ত, খারাপ দুষ্ট কৌশল, দুরাচার, বলাৎকার আদির ঘটনা বানিয়ে যায়, ইহাতে স্ত্রীরাও কারণ। তাহারা যদি উত্তম অরঞ্জিত বস্ত্র পরিধান করত, নিজের স্তন, নিতম্ব আদি কামোক্তজনক অঙ্গের প্রদর্শন না করত, নিজের চোখ নিচের দিকে রেখে, সোজা রাস্তাতে চলত তখন দুষ্টের সাহস হতো না যে তাহার উত্তক্ত করা। যখন স্ত্রীরা স্বয়ংই ঢঙ্গ করে, রঙ্গ-তামাসা, চুছ বস্ত্রকে পরিধান করে, হেলে-দুলে, আকর্ণ শ্রৃঙ্গার করে ঘর থেকে বাহিরে যায়, বাজারে কেনাকাটা করে তখন ঐ দুরাত্মার ইহার দুরাচার করার সাহস হয়। যদি ঐরকম না করত। স্তন, নিতম্ব আদি গোপানঙ্গের প্রদর্শন করা লম্পটতা, এই লম্পটতার প্রদর্শন দর্শনকারীর মনে বিষয়াক্তি উৎপন্ন হয় আর বিষয়াক্ত ব্যক্তিই ব্যভিচারী, দুরাচারী হওয়া প্রয়াস করেন আর যে সমাজে দুরাচার, ব্যভিচার, অনাচার বিস্তার হয় সেই সমাজে শৌর্য, পরাক্রম, উৎসাহ, আদর্শ পরম্পরার বিনাশ হয়ে যায়।
বিশ্বের এক বহুত বড় সমস্যা যে বাচ্চা খারাপ হয়ে যায়। সকলেই বরে থাকেন যে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বৈদিক জীবন পদ্ধত্তি দ্বারা পরীক্ষা করা যায় তো এই নিষ্কর্ষ নিবারণে বাচ্চা নষ্ট হতো না, বিগড়ে যাওয়া আর বিগড়ানোকারীর মধ্যে মা-র নাম শীর্ষস্থ হত। স্ত্রী নতুন সন্তানের জননীই নয় পরন্তু জীবন নির্মাত্রীও হয় এজন্য বেদে ব্রহ্মা শব্দ প্রয়োগ করেছে। ভাষ্যঃ স্বামী জগদীশ্বরানন্দ সরস্বতী